শেরপুর প্রতিনিধি
চাঁদাবাজির অভিযোগ ও চাঁদা না পেয়ে ইউনিয়ন পরিষদে তালা দেওয়ার অভিযোগে শেরপুর জেলা সদরের লছমনপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সবুজ আহাম্মেদ (৩৫) ও বর্তমান সভাপতি আল আমিন ইসলাম সাগরকে (২৬) পুলিশে দিয়েছেন ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গদলের নেতাকর্মীরা। গত বুধবার রাতে লছমনপুর ইউনিয়নের কুসুমহাটি বাজারস্থ লছমনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে তাদের আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়। আটক মো. সবুজ আহাম্মেদ লছমনপুর ইউনিয়নের বড় ঝাউয়েরচর এলাকার আলতাব হোসেনের ছেলে ও মো. আল আমিন ইসলাম সাগর কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন লছমনপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, লছমনপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সবুজ আহাম্মেদ ও বর্তমান স্থগিতকৃত সভাপতি আল আমিন ইসলাম সাগর দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডে আসেন না। তারা বিভিন্ন স্থানে দলের নাম করে চাঁদাবাজি করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করে আসছেন। তারা তাদের কিছু অনুসারী নিয়ে গত বুধবার চাঁদার দাবিতে বলায়েরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে তার পরিষদে লাঞ্ছিত করে। লছমনপুর ইউনিয়ন পরিষদে এসে চেয়ারম্যানের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে ও পরিষদের সচিবসহ অন্যদের বের করে দিয়ে পরিষদের ভবনে তালা দেয়। কুসুমহাটি বাজারে আশপাশের একাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে চাঁদা দাবি করে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। ফলে দলীয় ভাবমূর্তি রক্ষায় গত বুধবার রাতে ব্যবসায়ীদের সহায়তায় ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গদলের নেতাকর্মীরা মিলে সবুজ ও সাগরকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনার পরপরই লছমনপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মো. আল আমিন ইসলাম সাগরকে সভাপতি পদসহ প্রাথমিক সদস্য থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে শেরপুর সদর উপজেলা ছাত্রদল। বহিষ্কারের বিষয়টি রাতেই নিশ্চিত করেন শেরপুর সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শারদুল ইসলাম মুরাদ ও সদস্যসচিব সুমন আহমেদ। তারা জানান, এর আগে, গত ১৭ জুলাই দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে মো. আল-আমিন ইসলাম সাগরের লছমনপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতির পদ স্থগিত করা হয়। এদিকে, এ ঘটনায় লছমনপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও মহিলা দলের নেত্রী আলেয়া বেগম বাদী হয়ে সবুজ ও সাগরসহ পাঁচ জনকে আসামি করে শেরপুর সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে, লছমনপুর ইউনিয়নের বড় ঝাউয়েরচর এলাকার আলতাব হোসেনের ছেলে মো. সবুজ আহাম্মেদ (৩৫), কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে মো. আল আমিন ইসলাম সাগর (২৬), একই এলাকার মতিউর রহমানের ছেলে ছায়দুর রহমান (৩২), লছমনপুর এলাকার মৃত এরশাদ আলীর ছেলে মো. নূর শাহ আলম পাপ্পু (৩৮), ঘীনাপাড়া এলাকার শহিদুল ইসলামের ছেলে মো. নূরনবী ইসলামসহ (২৫) অজ্ঞাত আরও ৬-৭ জনকে। লছমনপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শরিফ আল জায়েদ বলেন, চেয়ারম্যানকে না পেয়ে আমাকে রুম থেকে বের করে দিয়ে তালা দিয়েছে। শেরপুর সদর থানার ওসি জুবাইদুল আমল বলেন, দুই ছাত্রনেতার বিষয়ে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তারা থানা হেফাজতে রয়েছে। তাদের বিষয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে মামলার কাজ চলমান রয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
